ফাতাহ্ মুসেলী বলেন : রোগীকে রোজ রোজ খাদ্য, পানীয় ও ওষুধপত্র কিছু না দিলে সে কি মরে যাবে না? লোকেরা বলল : নিঃসন্দেহে মরে যাবে। তিনি বললেন : আত্মার অবস্থাও তদ্রূপ। আত্মাকে তিন দিন এলেম ও জ্ঞান থেকে উপোস রাখলে সে মরে যায়।
তাঁর এ উক্তি যথার্থ কেননা, জ্ঞান ও প্রজ্ঞা হচ্ছে আত্মার খোরাক; এগুলোর মাধ্যমেই তার জীবন; যেমন দেহের খোরাক খাদ্য। যার জ্ঞান নেই, তার অন্তর রুগ্ন মৃত্যু তার জন্যে অবশ্যম্ভাবী। কিন্তু সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি তার আত্মার রোগ ও মৃত্যুর খবর রাখে না। দুনিয়ার মহব্বত ও কাজ কারবারে লেগে থাকার কারণে তার চেতনা লোপ পায়। যেমন ভয় ও নেশার আতিশয্যে জখমের ব্যথা অনুভূত হয় না; যদিও বাস্তবে ব্যথা থাকে। কিন্তু মৃত্যু যখন দুনিয়ার বোঝা ও সম্পর্ক ছিন্ন করে দেয়, তখন সে আত্মার মৃত্যুর কথা জানতে পারে এবং পরিতাপ করে। অবশ্য তখন পরিতাপে কোন উপকার হয় না। ভীত ব্যক্তির ভয় অথবা মাতালের নেশা দূর হয়ে গেলে ভয় ও নেশার অবস্থায় তার যেসব জখম লাগে, সেগুলো সে হাড়ে হাড়ে টের পেতে থাকে। সত্য উদ্ঘাটিত হওয়ার সেই দিনের ভয়াবহতা থেকে আমরা আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করি। কেননা, এখন মানুষ ঘুমিয়ে আছে। মৃত্যু হলে জাগ্রত হবে।
[ এহইয়াউ উলুমিদ্দীন খন্ড ১ - ইমাম গাযালী রহঃ ]