বাক্যটি ব্যাপকভাবে হাদীস হিসাবে বলা হয়ে থাকে। প্রকৃত পক্ষে এটি পরবর্তী কারো বাণী। তবে সন্দেহ নেই যে, বক্তব্যটি সঠিক ও বাস্তবসম্মত। ইলমে দ্বীন হাসিলের জন্য যত দূরের সফরই হোক, তাওফীক হলে করা উচিত। ইলম অন্বেষণে কখনো মেহনত-মুজাহাদকে ভয় পাওয়া উচিত নয়। তদ্রূপ পার্থিব জীবনে প্রয়োজনীয় শিল্প ও বিদ্যা শিক্ষার জন্যও দূর দূরান্তে সফর করা জায়েয; বরং তা একটি পর্যায় পর্যন্ত কাম্যও বটে। এই সকল কিছু স্বস্থানে বিদ্যমান আছে এবং শরীয়তের বিভিন্ন দলীল দ্বারা তা প্রমাণিত। কিন্তু আমাদের আলোচ্য বাক্যটি হাদীস নয়। যদিও তা হাদীস হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে, কিন্তু সনদে আবু ‘আতিবা তরীফ ইবনে সুলায়মান নামক একজন রাবী আছে যে হাদীস শাস্ত্রের ইমামগণের দৃষ্টিতে মতারূক (পরিত্যক্ত)। তাকে হাদীস জাল করার অভিযোগেও অভিযুক্ত করা হয়েছে। রিজাল ও রেওয়ায়েত-শাস্ত্রের বিখ্যাত ইমাম আবু জা’ফর উকাইলী লেখেন- (আরবী) -আয-যুআফাউল কাবীর, উকাইলী ২/২৩০; কিতাবুল মাজরূহীন, ইবনে হিব্বান ১/৩৮২; মিযানুল ইতিদাল ২/২৫৮; আলমুনতাখাব মিনাল ইলাল লিল-খাল্লাল ইবনে কুদামাহ পৃ. ১২৯-১৩০; আলমাকাসিদুল হাসানাহ, সাখাভী পৃ. ১২১।
ইলম অর্জনের জন্য সুদূর চীন দেশে যাও
ইমাম বায়হাকী (رحمة الله)সহ আরও অনেকে সংকলন করেন-
أَخْبَرَنَا أَبُو عَبْدِ اللهِ الْحَافِظُ، أخبرنا أَبُو الْحَسَنِ عَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ عُقْبَةَ الشَّيْبَانِيُّ، حدثنا مُحَمَّدُ بْنُ عَلِيِّ بْنِ عَفَّانَ، وَأَخْبَرَنَا أَبُو مُحَمَّدٍ الْأَصْبَهَانِيُّ، أخبرنا أَبُو سَعِيدِ بْنُ زِيَادٍ، حدثنا جَعْفَرُ بْنُ عَامِرٍ الْعَسْكَرِيُّ، قَالَا: حدثنا الْحَسَنُ بْنُ عَطِيَّةَ، عَنْ أَبِي عَاتِكَةَ، - وَفِي رِوَايَةِ أَبِي عَبْدِ اللهِ حدثنا أَبُو عَاتِكَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: اطْلُبُوا الْعِلْمَ وَلَوْ بِالصِّينِ، فَإِنَّ طَلَبَ الْعِلْمِ فَرِيضَةٌ عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ
– ‘‘হযরত আনাস বিন মালেক (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত। রাসুল (ﷺ) ইরশাদ করেন, ইলম অর্জনের জন্য সুদূর চীন দেশে হলেও যাও, কেননা ইলম অর্জন করা প্রত্যেক মুসলমানের উপর ফরয।’’
➥{ইমাম উকাইলী : আদ্ব-দ্বআফাউল কাবীর, ২/২৩০ পৃ. ক্রমিক. ৭৭৭, ইমাম বায়হাকী : শুয়াবুল ঈমান : ২/২৫৪ পৃ: হা/১৬৬৩, ইমাম ইবনে আদী : আল-কামিল : ২/২০৭ পৃ., ইমাম ইবনে আবদুল বার, জামিউল বায়ানুল ইলমে ওয়া ফাদ্বলিহী : ১/২৮ পৃ. হা/২০, ইমাম জালালুদ্দীন সূয়তী, আল-জামেউস সগীর : ১/১৬৮ পৃ.হা/১১১০, ইমাম গায্যালী : ইহইয়াউল-উলুমুদ্দীন : ১/১৫ পৃ., ইমাম আবু নুয়াইম ইস্পাহানী : আখবারুল ইস্পাহানী : ২/১০৬ পৃ., ইমাম দায়লামী, আল-ফিরদাউস, ১/৭৮ পৃ. হা/২৩৬, ইমাম খতিবে বাগদাদী : তারিখে বাগদাদ : ৭/৩৬৪ পৃ., বায়হাকী, আল-মাদখাল, ১/২৪১ পৃ. হা/৩২৫, ইমাম বায্যার, আল-মুসনাদ, ১/১৬৪ পৃ. হা/৯৫, আল্লামা মুত্তাকী হিন্দী : কানযুল উম্মাল : ১০/১৩৮ পৃ. হা/২৮৬৯৭, ইমাম মানাবী : ফয়যুল কাদীর : ১/৫৪২ পৃ. হা/১১১০}
Getting Info...