ইমাম নববী (৬৭৬ হি) ‘আমার পিতা ও তোমার পিতা জাহান্নামে’- হাদীসটিকে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর পিতামাতার কাফির অবস্থায় মৃত্যুবরণের নিশ্চিত প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করে বলেন:
فِيهِ أَنَّ مَنْ مَاتَ عَلَى الْكُفْر فَهُوَ فِي النَّار، وَلا تَنْفَعهُ قَرَابَة الْمُقَرَّبِينَ، وَفِيهِ أَنَّ مَنْ مَاتَ فِي الْفَتْرَة عَلَى مَا كَانَتْ عَلَيْهِ الْعَرَب مِنْ عِبَادَة الأَوْثَان فَهُوَ مِنْ أَهْل النَّار، وَلَيْسَ هَذَا مُؤَاخَذَة قَبْل بُلُوغ الدَّعْوَة، فَإِنَّ هَؤُلاءِ كَانَتْ قَدْ بَلَغَتْهُمْ دَعْوَة إِبْرَاهِيم وَغَيْره مِنْ الأَنْبِيَاء
‘‘এ হাদীসে নির্দেশনা রয়েছে, যে ব্যক্তি কুফরী অবস্থায় মৃত্যুবরণ করবে সে জাহান্নামী। আল্লাহর প্রিয়ভাজনদের আত্মীয়তা তার কোনো উপকার করবে না। এ হাদীসে আরো নির্দেশনা রয়েছে, আরবের মানুষগণ যেরূপ মুর্তিপূজায় লিপ্ত ছিল সেরূপ কর্মের মধ্যে থেকে যে ব্যক্তি রাসূল-বিহীন ‘ফাতরাতের’ সময়ে মৃত্যুবরণ করেছে সে ব্যক্তিও জাহান্নামী। এরূপ ব্যক্তিদের জাহান্নামে যাওয়ার অর্থ এ নয় যে, তাদেরকে দীনের দাওয়াত পৌঁছানোর পূর্বেই শাস্তি দেওয়া হলো। কারণ, এদের কাছে ইবরাহীম (আঃ) ও অন্যান্য নবীর দাওয়াত পৌঁছেছিল।’’ (নববী, শারহু সাহীহ মুসলিম ৩/৭৯)
ইমাম বাইহাকী ও অন্যান্য আলিম বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। বাইহাকী রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর পিতামাতা ও পিতামহের জাহান্নামী হওয়ার অর্থে অনেকগুলো হাদীস উদ্ধৃত করেন। এরপর তিনি বলেন:
وكيف لا يكون أبواه وجده بهذه الصفة في الآخرة؟ وكانوا يعبدون الوثن حتى ماتوا، ولم يدينوا دين عيسى ابن مريم عليه السلام. وأمرهم لا يقدح في نسب رسول الله ﷺ؛ لأن أنكحة الكفار صحيحة، ألا تراهم يسلمون مع زوجاتهم فلا يلزمهم تجديد العقد، ولا مفارقتهن إذا كان مثله يجوز في الإسلام.
‘‘তাঁর পিতা, মাতা ও পিতামহ মৃত্যু পর্যন্ত মূর্তিপূজা করেছেন এবং তাঁরা ঈসা (আঃ)-এর দীনও গ্রহণ করেন নি, কাজেই তাঁরা আখিরাতে জাহান্নামী হবেন না কেন? এ বিষয়টি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর বংশের পবিত্রতার পরিপন্থী নয়; কারণ কাফিরদের বিবাহ বিশুদ্ধ। এজন্য তো কাফিরগণ যখন তাদের স্ত্রীদের সাথে একত্রে ইসলাম গ্রহণ করেন তখন নতুন করে বিবাহ পড়ানোর দরকার হয় না এবং স্ত্রীদের থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ারও কোনো বিধান নেই, যদি এরূপ বিবাহ ইসলামে বৈধ থাকে।’’ (বাইহাকী, দালাইলুন নুবুওয়াত ১/১১২, ১১৯-১২২।)