সুস্থতা। মানুষের সারাজীবনের একান্ত কামনা। কেউ অসুস্থ হোক, তা চায় না। কিন্তু জীবনের বাস্তবতায় এ সমস্যায় পড়তে হয়। এটাকে আসলে সমস্যা বলাটাও ঠিক না। কারন এটা একটা বিপদ। আর বিপদ তো ভাল জিনিস। এর দ্বারা বান্দার গুনাহ মাফ হয়। বান্দার মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। বান্দা আল্লাহর নৈকট্যে পায়। তার রহমতের দারস্থ হয়। রবের সাথে একটা সম্পর্ক তৈরি হয়। সে হিসেবে তো এটা নিয়ামত। সুস্থতা -অসুস্থতা উভয়টাই নিয়ামত।
অসুস্থতার ধরুন বান্দার যে আমলের ঘাটতি হয় আল্লাহ তা পূর্ন করে দেন। তার সওয়াব তাকে পূর্নভাবে প্রদান করেন। তাহলে কত লাভ! সওয়াবও কমলো না। উল্টো মর্যাদা বৃদ্ধি পেল। গুনাহ মাফ হলো।তবুও অসুস্থ ব্যক্তির মনে একটা তড়প থাকে সুস্থ হওয়ার। সে এ অসুস্থতা নিয়ে পড়ে থাকতে চায় না। অন্যের বোঝা হয়ে থাকতে চায় না। চায়, আল্লাহর দুনিয়াটা তার জন্য প্রশস্থ হোক। এ যমিনে সে নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়াক। এজন্য তার চোখ থেকে অশ্রু ঝরে। হৃদয়টা ধুমড়েমুচড়ে যায়। শত হতাশার মাঝেও আশার আলো দেখে। একটুখানি সুস্থতার অনুভব তার সারা শরীরে একটি শিহরণ জাগিয়ে দেয়। পরক্ষনেই শরীরটা যখন আবার সাড়া না দেয় সেও ভারাক্রান্ত হয়ে পড়ে। এভাবেই কাটে তার দিনকাল।
আর যে ব্যক্তিটি জিন,যাদু নজরে আক্রান্ত। যার জীবনটা শয়তান কবিরাজ নষ্ট করে দিয়েছে। যার পরিবারটা একেবারে ধ্বংস করে দিয়েছে। অসুস্থতার ধরুন যার পরিবারটা একেবারে তলায় নেমে গিয়েছে তাদের কী অবস্থা! তাদের বাস্তবতা, অনূভূতি তো আরও মারাত্বক! আরও বেদনাদায়ক।
রোগির খোজখবর নেওয়া একজন মুসলিম হিসেবে তার হক। মুসলিমদের পরস্পরের ছয়টি হক রয়েছে। তার মধ্যে এটি একটি।
আল্লাহর নবী বলেছেন,কোনো মুসলমান যখন তার অসুস্থ মুসলমান ভাইকে দেখতে যায়, তখন সে ফিরে আসা (যতক্ষণ সেখানে থাকে ততক্ষণ) পর্যন্ত জান্নাতের ফল আহরণ করতে থাকে।’ (মুসলিম, মিশকাত)
আল্লাহর নবী আরও বলেছেন, যখন কোনো বান্দা তার অসুস্থ মুসলমান ভাইকে দেখতে যায় অথবা তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য যায় তখন একজন ফেরেশতা উচ্চস্বরে আকাশ থেকে ঘোষণা করে বলেন- তুমি ভালো থাক, তোমার চলাফেরা ভালো ছিল, তুমি বেহেশতে ঠিকানা করে নিয়েছো।
যে অসুস্থ তার এ ফিলগুলো খুব ভালো বুঝে আসে। এ হাদিসগুলোর মর্মার্থও ভালো বুঝে আসে। কেন এত ফজিলত। আল্লাহ সবাইকে সুস্থ রাখুক। অসুস্থতার নিয়ামতও কখনো কখনো দেখা দিক। যাতে সুস্থতার কদর সে করতে পারে।