-শেষ ঠিকানা দেখতে গিয়েছিলাম।
ফজরের নামাজের পর প্রতিদিন এইদিক সেইদিক নদীর পাড়, মাঠে হাটা হাটি করি।আজ গিয়েছিলাম, যেখানকার ফাইনাল বাসিন্দা হবো , আসল ঠিকানায় বেড়াতে। কবর স্থানে। আসল ঠিকানা দেখে আসলাম। মাঝে মাঝে যাওয়া ভালো।
.
সারি সারি কবর। ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ব্যবসিক, ফকির-মিসকীন, আস্তিক, নাস্তিক, সব শ্রেণীর সব বয়সের মানুষ আছে। কয়েক কবরে লেখা দেখলাম নামের নীচে শিক্ষাগত ডিগ্রী লেখা আছে।
কারোর কবর সাজানো ঘেড়াও করা, কারোর বা এমনি বেড়া দিয়ে। কারোরটা মিশে গেছে ।
.
আচ্ছা ডিএমসি তে পড়লে কি আযাব একটু কম হবে ? কিংবা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়লে একটু বেশি ? ৫ তলা প্রসাদ কি কোনভাবে কবরে নিয়ে যাওয়া যাবে ? বা সুন্দরী প্রিয়তমা স্ত্রী ? ছুটছি কিসের পেছনে ?
.
দুনিয়ার ক্যারিয়ার টা, রিযিক না হয় নিশ্চিত করলাম, কিন্তু কবরের ক্যারিয়ার টা ? সেখানকার রিযিক ?
শত শত কবর লাগালাগি। অথচ কারোর সাথে কারোর লিংক নাই। জায়গা নিয়ে কোন ঝগড়া নাই, এরাই কি দুনিয়াতে সামান্য কিছু জমি নিয়ে ঝগড়া করেছিল ?
"দুনিয়ালোভী ব্যক্তির দুশ্চিন্তা, দুর্ভোগ ও আক্ষেপ কখনো শেষ হয় না। সে যতই অর্জন করে, ততই অপ্রাপ্তির আফসোস বাড়ে। এক প্রাপ্তি তাকে আরও অর্জনের জন্য তৃষ্ণার্ত করে তোলে। না তার চিন্তা কমে, না কষ্ট বা ক্লান্তি। সে আরও দুর্বল হয়, পার্থিব স্বার্থের পেছনে ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত হয়ে ছোটে। এদিকে তার পরকাল মুখ থুবড়ে পড়ে থাকে। ধ্বংস হয়ে যায় তার পরজীবনের সহায়-সম্বল।"
- ইবনুল কাইয়িম (রহ.)
[ইগাসাতুল লাহফান ১/৩৭]
- ইবনুল কাইয়িম (রহ.)
[ইগাসাতুল লাহফান ১/৩৭]
কেউ হয়ত ভেতরে পুড়ছে, কেউবা জান্নাতের বাতাসে শান্তির নিদ্রায় শায়িত। প্রত্যেকেই একা। নিজ নিজ। দুনিয়াই তাদের সব ছিল, এখন তাদের আমল ছাড়া আর কিছুই নাই। তাহলে কি প্রথম থেকে আমল এর উপরই ক্যারিয়ার গড়া শ্রেয় ছিলো না, আমল কেই আপন বানানো!!
তাহলে তো সব হারিয়ে আবার জান্নাতে সব ফিরিয়ে দেওয়া হতো বাপ-মা, স্ত্রী-সন্তান,যেখানে আর হারানোর ভয় নাই !!
মানুষের জীবনে মৃত্যুর মতন নির্মম সত্য আর কিছু নেই অথচ সেই নির্মম সত্যকে, সেই অখন্ডনীয় বাস্তবতাকে অস্বীকার করার জন্য আমাদের কত তোড়জোড়। আমরা মৃত্যু থেকে পালিয়ে বাঁচতে চাই। কিন্তু পালাতে গিয়ে আমরা মৃত্যুর আরও সন্নিকটে চলে আসি। মৃত্যু আসলে আমাদের তাড়া করে না। মৃত্যু তার নির্ধারিত স্থানে অপেক্ষারত। সময়ের পরিক্রমায় আমরাই বরং মৃত্যুর দিকে ছুটে যাই নিরন্তর।" [বই: বেলা ফুরাবার আগে]
.
এই মাটিতে তারাও একদিন হাটাহাটি করেছে, আজ আমরা যেমন টা করি। খুব রহস্যময় জীবন, মৃত্যুর সত্যটা খুব কঠিন। এই সত্য সবাই জানি, তবুও এই রঙিন দুনিয়ার পেছনে ছুটোছুটি থামছেনা।
.
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা যেমন সূরা তাকাছুরে বলেছেন,
"প্রাচুর্যের লালসা তোমাদেরকে গাফেল রাখে। এমনকি, তোমরা কবরস্থানে পৌঁছে যাও। এটা কখনও উচিত নয়। তোমরা সত্ত্বর-ই জেনে নেবে......"
এই মাটিতে তারাও একদিন হাটাহাটি করেছে, আজ আমরা যেমন টা করি। খুব রহস্যময় জীবন, মৃত্যুর সত্যটা খুব কঠিন। এই সত্য সবাই জানি, তবুও এই রঙিন দুনিয়ার পেছনে ছুটোছুটি থামছেনা।
.
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা যেমন সূরা তাকাছুরে বলেছেন,
"প্রাচুর্যের লালসা তোমাদেরকে গাফেল রাখে। এমনকি, তোমরা কবরস্থানে পৌঁছে যাও। এটা কখনও উচিত নয়। তোমরা সত্ত্বর-ই জেনে নেবে......"
ইমাম ইবনুল ক্বাইয়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,
❝প্রতিটি আত্মা কিয়ামতের দিন নিজেকে দোষারোপ করবে। নেক আমলকারীরা আফসোস করবে তার আমল বৃদ্ধি না করার কারণে, আর গুনাহগারের দল আফসোস করবে গুনাহসমূহ থেকে তাওবাহ না করার কারণে।❞ — ইগাছাতুল লাহফান, পৃঃ ১০৫
❝প্রতিটি আত্মা কিয়ামতের দিন নিজেকে দোষারোপ করবে। নেক আমলকারীরা আফসোস করবে তার আমল বৃদ্ধি না করার কারণে, আর গুনাহগারের দল আফসোস করবে গুনাহসমূহ থেকে তাওবাহ না করার কারণে।❞ — ইগাছাতুল লাহফান, পৃঃ ১০৫
ওয়াহাব ইবনু মুনাব্বিহ,
‘মুমিন জ্ঞানার্জনের জন্য দেখে, আত্মসমর্পণের জন্য চুপ থাকে, উপলব্ধির জন্য কথা বলে এবং নেকিলাভের উদ্দেশ্যে নিরিবিলি হয়।’
___
[ ইবনু আসাকির, তারিখু দিমাশক : ৬৩/৩৮৯ ]
হ্যা আমরা সত্ত্বর-ই জেনে যাবো, আজ মরলে আজই জেনে যাবো, শুধু জানিনা কী অবস্থায় জানব!
___
[ ইবনু আসাকির, তারিখু দিমাশক : ৬৩/৩৮৯ ]
হ্যা আমরা সত্ত্বর-ই জেনে যাবো, আজ মরলে আজই জেনে যাবো, শুধু জানিনা কী অবস্থায় জানব!