শুধু পর্দা করলেই কি ভালো হওয়া যায়?

শুধু পর্দা করলেই কি ভালো হওয়া যায়?


সহকর্মীর পাশে বসে স্বামীর নামে গীবত করে। স্বামীর গোপনীয় কথা বলে ফেলে যাতে তার সাথে ফ্রি হওয়া যায়। অনেক গভীর বিষয়ও জানা যায়। দীর্ঘ চ্যাট শুরু হয়। দুজনের মাঝে তৈরি হয় অন্তরঙ্গ সম্পর্ক। কিন্তু দিনশেষে কেউ কাউকে নিয়ে কবরে যাবে না। এমনকি মেয়েটার চোখে-ঠোঁটে মধু থাকলেও না; মেয়েটা সবচেয়ে সুন্দরী হলেও না।

পর্দা করে তবে...

ফেক আইডি খুলে চ্যাট করতে থাকে। ভালোবাসার জালে আবদ্ধ হয়। রিলেশনে জড়িয়ে পড়ে। উত্তেজনাকর কথাবার্তাও হয়। কিছুক্ষণ পর ঘর থেকে বের হওয়ার সময় ঠিকই হিজাব পরে। গরিবদের কাছে গিয়ে দান-সদকা করে। এই আশায় যে, কিয়ামতের দিন হয়তো জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচবে।

তার পর্দা কেন তাকে অনলাইনের পর্দা করাতে পারল না?

পর্দা করে তবে...

কন্ঠটা বেশ কর্কশ। কিন্তু ছেলেদের সাথে কথা বলার সময় কঠিনতা কোথায় যেন হারিয়ে যায়। কন্ঠ হয়ে যায় বিড়ালের মত। ফোন ধরার সাথে সাথে মিষ্টি গলায় কথা বলে। মাঝে মাঝে গলাটা একটু পরিষ্কার করে নেয়। বেশ পারদর্শী অভিনেত্রী।

যে মেয়েটা এখন বেপর্দা হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে, সে যে আজীবন এমনই থাকবে, এর কোনো নিশ্চয়তা নেই। যখন-তখন তার মধ্যে আল্লাহর ভয় ও আখিরাতের চেতনা জাগ্রত হতে পারে; মুহূর্তেই নিজেকে বদলে ফেলতে পারে। যে ছেলেটা এখন মসজিদ থেকে দূরে থাকছে, গার্লফ্রেন্ডে মজে আছে, তার পরিবর্তনটাও হয়তো খুব বেশি দূরে নয়। আপনি কাউকে দ্বীনের দাওয়াত দিলে তৎক্ষণাৎ রেজাল্ট পাওয়ার জন্য তাড়াহুড়া করবেন না। এই তাড়াহুড়া করতে গিয়ে এমন কিছু বলে বসবেন না, যার ফলে তাদের মনে দ্বীনের প্রতি বিতৃষ্ণা তৈরি হয়, ইসলাম মেনে চলা কঠিন মনে হয়। আমাদের মাধ্যমে কেউ ইসলামে না আসলেও সমস্যা নেই, কিন্তু আমাদের দ্বারা কেউ ইসলাম থেকে বিমুখ হলে সর্বনাশ। আল্লাহর আদালতে কঠিন হিসাবের মুখোমুখি হতে হবে।
.
দেখুন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা কুরআন কারিমে নবিজির ব্যাপারে কী বলেছেন—
.
حَوْلِكَ فَاعْفُ عَنْهُمْ وَاسْتَغْفِرْ لَهُمْ وَشَاوِرْهُمْ فِي الْأَمْرِ فَإِذَا عَزَمْتَ فَتَوَكَّلْ عَلَى اللهِ إِنَّ اللهَ يُحِبُّ الْمُتَوَكِّلِيْنَ-
.
‘‘আর আল্লাহর রহমতে আপনি তাদের প্রতি (অর্থাৎ উম্মতের প্রতি) কোমলহৃদয় হয়েছেন। যদি আপনি কর্কশভাষী ও কঠোর হৃদয়ের অধিকারী হতেন, তাহলে তারা আপনার পাশ থেকে সরে যেতো।’’ [সুরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৫৯]
.
পৃথিবীর ইতিহাসে ফেরাউনের চেয়ে জঘন্য, বর্বর ও অত্যাচারী শাসক তেমন কেউ আসেনি। অথচ আল্লাহ যখন তাকে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেওয়ার উদ্দেশ্যে নবি মুসা (আ.) ও তাঁর ভাই নবি হারুন (আ.)-কে প্রেরণ করেন, তখন তাঁদের বলে দেন—
.
اذْهَبَا إِلَى فِرْعَوْنَ إِنَّهُ طَغَى، فَقُولَا لَهُ قَوْلًا لَيِّنًا لَعَلَّهُ يَتَذَكَّرُ أَوْ يَخْشَى
.
‘‘আপনারা দুজন ফেরাউনের নিকট যান; নিশ্চয়ই সে সীমালংঘন করেছে। এরপর তার সাথে নম্র ভাষায় কথা বলুন। সম্ভবত সে উপদেশ গ্রহণ করবে অথবা ভয় পাবে (আল্লাহর শাস্তিকে)।’’ [সুরা ত্ব-হা, আয়াত: ৪৩-৪৪]

আচ্ছা, কেন এত রকমফের? সবাই কি পর্দা করছে আদৌ? এরকম দৃশ্যপট আমরা সবাই দেখেছি হয়তো। দেখে বুঝতে পেরেছি কিছু একটা ঘাপলা আছে। পর্দার প্রকৃত অর্থ তারা বোঝেনি। হয়তো কেউ কেউ সত্যিই পর্দার অর্থ জানে না। এরা কি আসলেই পর্দানশীল?

নাকি পর্দা করে, তবে...
Read Also :

Getting Info...

Post a Comment

Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.