বর্তমানে সময়ে অনেকে দ্বীনি মাদারিস ও আলেমদের নিন্দা করেন এই কথা বলে যে, আগেকার যুগের আলেমরা দ্বীনি ও দুনিয়াবি উভয় জ্ঞানেই পারদর্শী হতেন, এটা ইতিহাসেরর একটা খণ্ডিত ও অশুদ্ধ বয়ান। কিছু আলেম এমন ছিলেন, বাকি এটা সামগ্রিক রূপ ছিল না।
বরং স্বাভাবিকভাবে যে যেই ধারার শিক্ষাকে নির্বাচন করত, সে ধারাতে পারদর্শীতা অর্জন করত। আর এটাই মূলত শাস্ত্রীয়ভাবে সঠিক নীতি। হ্যাঁ বিরল কিছু লোকের জন্য উভয় ধারার জ্ঞান অর্জন সম্ভব হতে পারে। আমার এই দাবির যথার্থতা পাবেন শরয়ী ইলমের জ্ঞানতাত্ত্বিক যেই সিলসিলা, সেখানে দৃষ্টিপাত করলে। এই জ্ঞানতাত্ত্বিক সিলসিলায় যাদেরকে আপনি অথোরিটি হিসেবে দেখবেন, যাদের বক্তব্য ও লিখনীকে এই সিলসিলার রচনাভাণ্ডার হিসেবে পাবেন, তাদের অধিকাংশকেই আপনি মানবীয় পার্থিব কোন শাস্ত্রের অথোরিটি হিসেবে পাবেন না। আবার মুসলিম ইতিহাসে মানবীয় জ্ঞান বিজ্ঞানে যাদেরকে অথোরিটি ও উদ্ভাবক হিসেবে পাবেন, শরয়ী জ্ঞানের সিলসিলায় তাদেরকে অথোরিটি হিসেবে পাবেন না। এটাই স্বাভাবিক চিত্র।
এজন্য এই ধরণের বক্তব্য এনে আলেমদের দোষারোপ করা একটি অপরাধমূলক কাজ। সমস্যা এখানে না যে, আলেমরা সব শাস্ত্রে পারদর্শী হচ্ছে না। সমস্যা হল শিক্ষাব্যবস্থায়, সমস্যা হল আমাদের জেনারেল কারিকুলাম দ্বীন বান্ধব না। যেখান থেকে মুসলিম ঘরের সন্তানরা মুসলিম ইঞ্জিনিয়ার, মুসলিম ডাক্তার হিসেবে বের হবে; কোন সেকুলার, লিবারেল দ্বীনহীন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে নয়। সমস্যা হলে, দুই ধারার সমন্বিত এমন শিক্ষাব্যবস্থার অভাব, যেখানে শরয়ী ইলমের শাখাগুলোর সাথে সাথে মানবীয় পার্থিব জ্ঞানের বিভাগগুলোও থাকবে এবং সেগুলো শরীয়াবান্ধব পরিবেশ ও মূল্যবোধ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে। যেখানে ছাত্ররা জ্ঞানের যেই শাখাকেই নির্বাচন করুক, নির্দিষ্ট পরিমাণ দ্বীনি ইলম হাসিল সবার জন্য বাধ্যতামূলক থাকবে।