মুসলিম ব্যবসায়ীদেরকে উদ্বুদ্ধ করতে গিয়ে প্রায়ই একটি কথা শোনা যায়, আমাদের নবীজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ব্যবসায়ী ছিলেন। ছিলেন উদ্যোক্তা।
ব্যবসায় ও উদ্যোক্তার ক্ষেত্রে তিনি আমাদের রোল মডেল। একজন লিখেছেন, ‘নবীজীর গুণ ও বৈশিষ্ট্যের অন্যতম একটি দিক হল, তিনি ছিলেন একজন গ্রেট বিজনেসম্যান। গ্রেটেস্ট অন্ট্রাপ্রেনর’। (আল-ইয়াযু বিল্লাহ)
নবীজীর গুণ ও পরিচয়ের মাঝে ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা (ব্যবসায়) কোনও পরিচয় ছিল না। এটি নবীর শানের সাথে সম্পূর্ণ বেমানান।
ব্যবসা বৈধভাবে করা হলে, তাতে আপত্তি নেই। মৌলিকভাবে ব্যবসা বৈধ। নবীজীও নবুওত প্রকাশের পূর্বে ব্যবসা ও অন্যান্য উপার্জনধর্মী কাজে ব্যস্ত ছিলেন। এসব আপন জায়গায় ঠিক আছে।
কিন্তু নবীজীর পরিচয়ে, গুণ বর্ণনায় যদি বলা হয়, তিনি ছিলেন বিজনেসম্যান, তাহলে তা নবুওতের শানের পরিপন্থী বলে বিবেচিত হবে। আমাদের নবীসহ কোনও নবী-ই সম্পদ উপার্জন ও সঞ্চয়ের ধান্ধা ও ব্যস্ততায় ছিলেন না। এটি নবুওতের বিশেষ কাজও ছিল না।
নবুওতের আগে নবীজী যে অল্প কিছু সময় উপার্জনে সম্পৃক্ত ছিলেন, তা বৈধ ছিল। কিন্তু নবুওত প্রকাশের পর কখনই এসব করেননি। সুতরাং নবী হিসাবে তাঁর পরিচয় ও গুণে ‘গ্রেট বিজনেসম্যান, ‘গ্রেটেস্ট অন্ট্রাপ্রেনর’-এসব কি বলা যায়?
মোটকথা, নবুওত প্রকাশের পর নবীজী কখনই সম্পদ উপার্জন, ব্যবসা ইত্যাদি কাজে ব্যস্ত হননি, সম্পদ সঞ্চয় করেননি। তাই তাঁর পরিচয়ে ‘গ্রেট বিজনেসম্যান, ‘গ্রেটেস্ট অন্ট্রাপ্রেনর’-এসব বলা অন্যায়।
হাঁ, ব্যবসা, চাকরীর স্ব স্ব স্থানে এর বৈধতা, ফযিলত সবই স্বীকৃত। কিন্তু এসবের গুরুত্ব বলতে গিয়ে সরাসরি নবীজীকে এসব উপাধী দিয়ে ব্যক্ত করা ঠিক নয়। সালাফ থেকে এর কোনও প্রমাণ নেই। সালাফের কেউ নবীজীকে ‘গ্রেট বিজনেসম্যান, ‘গ্রেটেস্ট অন্ট্রাপ্রেনর’ বা এ জাতীয় কোনও শব্দে পরিচিত করেননি।
(অবলম্বনে, খুতুবাতে হাকিমুল উম্মত, ২৩/১০৯-১২০)