আমাদের সবচেয়ে বড় পরিচয় আমরা মানুষ, আগে মানুষ তারপর ধর্ম, মানবতাই সবচেয়ে বড় ধর্ম, সকল ধর্মের চেয়ে মানুষ বড়, মানুষই শ্রেষ্ঠ ধর্ম, সবার উপরে মানষ সত্য, তাহার উপরে নাই- এই সবগুলোই হিউম্যানিজম তথা মানবতাবাদের মুখরোচক শ্লোগান।
এই শ্লোগানগুলোর মূল ভাব একটিই। সেটি হল, সম্পর্ক, আচরণ, মানবতা ও অধিকার এই সবকিছু নির্ধারণের ক্ষেত্রে দ্বীনি নির্দেশনাকে পিছনে ফেলে মানুষকে মানদণ্ড মানা। আল্লাহর নির্ধারিত মানবতা ও অধিকারের চেয়ে মানুষের নির্ধারিত মানবতা ও অধিকারকে মহান হিসেবে দেখা। এবং মানুষের ধর্মীয় পরিচয়কে গুরুত্ত্বহীন করে দেয়া। এজন্য যেসব প্রতিষ্ঠান, সংস্থা ও দল এই শ্লোগানগুলো প্রচার করে, তাদের ব্যাপারে মুসলিমদের সতর্ক থাকতে হবে।
সামাজিকভাবে হিউম্যানিস্ট সংস্থাগুলোর কার্যক্রমের মূল প্রোফাইল হল দুটিঃ
এক. নাগরিক অধিকার নিয়ে কাজ করা।
দুই. মানব সেবার কাজ করা।
এই দুই প্রোফাইল ব্যবহার করে খুব সহজেই তারা সাধারণ মানুষের কাছে মহান ও উদার হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। আর সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন উপলক্ষে এমন কিছু শ্লোগান ও চিত্র তারা প্রচার করতে থাকে যেগুলো মানবতা ও অধিকারের নামে দ্বীনি চেতনাবোধের বিরুদ্ধে জনমত তৈরি করে।
এবং এসব প্রচারণার মাধ্যমে তারা মুসলিমদের ঈমানী গায়রাত ও কুফুর- শিরকের প্রতি সহজাত ঘৃণাবোধকে নষ্ট করে দিচ্ছে। এই শ্লোগানগুলো মূলত ঈমান ও কুফুরের সীমানাকে মিটিয়ে দেয়।
একজন মুসলিমকে তার অজান্তেই কুফুরের সীমানায় প্রবেশ করিয়ে দেয়। মুসলিম পরিচয়কে পিছনে ফেলে মানুষ হিসেবে ভাবতে শিখানোর নীতিবাক্যের আড়ালে ব্যক্তির চিন্তাচেতনা ও জীবনবোধ থেকে দ্বীনের কর্তৃত্ব ও প্রভাবকে বিলুপ্ত করে দেয়াই হিউম্যানিজমের প্রধান লক্ষ্য।
আজ অসংখ্য অবুঝ মুসলিম হিউম্যানিজমের ধর্মে দিক্ষীত হয়ে ইসলামী শরীয়ার অনেক বিধান ও বিশ্বাসকে ঘৃণা করছে। সকল ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধার নামে কুফুর ও শিরকের প্রতি মুমিনের সহজাত ঘৃণাকে বিলুপ্ত করে কুফুর ও শিরকী কর্মকাণ্ড ও আয়োজনে লিপ্ত হচ্ছে। মানবসেবা ও মানবধিকার নিয়ে কাজ করতে গিয়ে আমরা যদি হিউম্যানিজম নামক ধর্মে দীক্ষিত হয়ে যাই, তাহলে আখেরাতে আমরা এই কর্মগুলোর মূল্য হারিয়ে ফেলব। এজন্য মানবতার নামে ঈমান হারানোর ব্যাপারে আমাদের সচেতন হতে হবে। হিউম্যানিস্ট তথা কথিত মানবতাবাদী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সংস্থা ও শ্লোগানের ব্যাপারে মুসলিম সমাজকে সতর্ক করতে হবে।