মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উম্মাহাতুল মুমিনীন, সাহাবায়ে কেরাম, সালাফে সালেহীন- এদের সকলের জীবনী ইসলামী জ্ঞানতত্ত্বে রেফারেন্স উৎস হিসেবে স্বীকৃত। এগুলোর ভিতর ইসলামী জীবনাদর্শ ও বিধানের অনেক উপাদান বিদ্যমান। ফলে এগুলোকে যথাযথভাবে সংরক্ষণ ও উপস্থাপন ওয়াজিব।
এগুলোতে নিজ থেকে অতিরিক্ত আবেগ, চিত্র, কল্পনা ইত্যাদি যোগ করা আদতে তাদের জীবনের প্রকৃত চিত্রকে অরক্ষিত ও বিকৃত করে দেয়। এটা এক প্রকার তাহরিফেরই অন্তর্ভুক্ত হয়। এজন্য তাদের জীবনীর ক্ষেত্রে বিশুদ্ধ সনদে বর্ণিত নুসুস বা ট্যাক্সটসমূহের উপর নির্ভর করে ভাষার সৌন্দর্যের ব্যাপারে যত্নশীল হওয়া যেতে পারে। কিন্তু সাহিত্যের অতিরিক্ত রঙ্গরস, নিজস্ব কল্পনা, চিত্র ও আবেগকে মিশিয়ে তাদের জীবনীকে উপস্থাপন করা বিকৃতির নামান্তর।
এই ধরণের সাহিত্য চর্চা করতে গিয়ে যারা রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিংবা সাহাবায়ে কেরামের শানে এমন কিছু লিখে ফেলে, যেটা তাদের শান অনুযায়ী বিদ্রূপের পর্যায়ে চলে যায়- তাদের কাজটা বিদ্রূপ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। কিন্তু তাদেরকে সরাসরি পারিভাষিক শাতিম বানিয়ে দেয়া ইলমে ফিকহের দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ ভুল কাজ। কা`ব বিন আশরাফের মত ইসলাম ও রাসুল বিদ্বেষী কবিদের সাথে তাদের তুলনা করা মারাত্মক অন্যায়।
এরা রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি বিদ্বেষ ও শত্রুতা প্রকাশ করতে গিয়ে রাসুলের শানে বেয়াদবি করেনি। এই শ্রেণির লোকেরা রাসুলের প্রতি ভালবাসা ও আবেগ প্রকাশ করতে গিয়ে তার শানে অনুপযুক্ত কথাবার্তা বলে ফেলেছে। তাদের পদ্ধতিটা ভুল এবং রাসুলের শানে অনুপযুক্ত শব্দ ব্যবহারের দরুণ লজ্জিত হয়ে তাদের তাওবা করা উচিত। কিন্তু ফিকহের কিতাবাদিতে যেই ধরণের শাতেমদের তাওবা কবুল হবে কি হবে না মর্মে ইখতিলাফ রয়েছে, এরা এই শ্রেণির শাতেম নয়।
( আমি স্মৃতি থেকে বলছি) শাতেমে রাসুল বিষয়ে লিখিত কোন কিতাবে এমনটা পড়েছিলাম যে, কেউ যদি রাসুলকে তিরস্কার করার উদ্দেশ্যে বলে রাসুলের জামার বোতামে ময়লা ছিল, তাহলে সেও কাফের। কিন্তু এই কথাটাই কেউ যদি রাসুলের কোন মহত্ব বোঝাতে গিয়ে বলে ( ভুল তথ্য দিয়ে হলেও) সেটা কুফুর হবে না। এটা বিভ্রান্তি হতে পারে।