আপনি দেখবেন, দুই আড়াই দশক আগেও বাংলা নববর্ষ কীভাবে উদযাপিত হতো। গ্রামে বৈশাখের কিছু অনুষ্ঠান পালন হতো হিন্দু পাড়াগুলোতে। এসবে মুসলমানরা খুব একটা যোগ দিত না। মুসলিম পরিবারের অতি উৎসাহী কোনো তরুণ সেসব অনুষ্ঠানে যোগ দিলেও সেটা ভালো চোখে দেখা হতো না। মনে করা হতো, সে অপর ধর্মীয় একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছে। অথচ সম্প্রতি এই বৈশাখ উপলক্ষে টাকাকড়ি খরচ, মার্কেটিং, সাজসরঞ্জাম বেচাকেনার নানা উৎসব লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।
মুসলমানদের ধর্মীয় রীতিনীতির পরিপন্থী এসব পুঁজিবাদী আয়োজনে শুধু কিছু লোকের পকেট ভারী হচ্ছে। আর যেসব নাগরিক টানাপোড়েনের মধ্যে দিয়ে সংসার চালায় এসব নতুন আমদানি করা সংস্কৃতির দাবি দাওয়া পুরণে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
বাংলা নববর্ষের নতুন আয়োজনে পুঁজিবাদী ব্যবস্থার প্রভাবটা বড়। লক্ষ করলেই এর নানা রকম বিষফল চোখে পড়ে। নারী-পুরুষকে পথে নামিয়ে দিয়ে অবাধ মেলামেশার ক্ষেত্র তৈরি করা হয়। ওঁৎ পেতে থাকা লোকেরা তখন মা-বোনদের সম্ভ্রম নষ্ট করে। চেষ্টা করেও এসব নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না প্রশাসন। এভাবে এমন অনেক কিছুই বাঙালি সংস্কৃতি হিসেবে চালিয়ে দেওয়া হয় যেগুলো আসলে বাঙালি সংস্কৃতিরও অংশ নয়। অথবা একসময় কোনো একটি আচরণ বাংলার একশ্রেণীর মানুষের সংস্কৃতি ছিল, পরে ধর্মীয় কারণে সেটার ভিন্নতা জল -পানির মতো আলাদা ও পরিষ্কার হয়ে গেছে, সেটাকে মুসলমানদের মধ্যে পুনঃস্থাপন করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
সুতরাং বাঙালি মুসলমানদের সতর্ক থাকতে হবে, সাংস্কৃতিক সব বিশৃংখলায় যোগ দেওয়ার আগে দেখতে হবে আমার দ্বীন, আমার ঈমান, আমার ধর্ম কী বলেছে। তারপর সংস্কৃতি, ধর্মের অনুগামী হয়ে যে সংস্কৃতি গড়ে ওঠে সেই সংস্কৃতি। আমাকে যিনি সৃষ্টি করেছেন সেই রব আল্লাহর বিধান ও নির্দেশনা মান্য করার বিষয়টি আগে। সংস্কৃতির বিষয়টি তার পরে।*
*মুফতি আবুল হাসান মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ হাফিজাহুল্লাহ
মুদির, মারকাযুদ দাওয়াহ আল ইসলামিয়া।