ফেসবুক আসক্তির কিছু প্রশ্নোত্তর
১. ভাইয়া/আপু, আমি তো দিনে মাত্র আধা ঘণ্টা ফেসবুকে বসি। এটাও কি সমস্যা?
উত্তরঃ হ্যাঁ। তুমি দিনে আধা ঘণ্টা ফেসবুকে বসো। এর কারণে তোমার মনযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ফেসবুকে অনেক ইস্যু নিয়ে নানান মত-দ্বিমত দেখতে পাও। এরপর তোমার মাথায় ওটা ঘুরতে থাকে। পড়ার সময়, ঘুমের সময় সেইগুলা নিয়ে চিন্তা করতে থাক। তাই দিনে আধা ঘণ্টা কেন, দশ মিনিট ফেসবুক ব্যবহারও সমস্যা। কর্মজীবনে প্রবেশ করার আগে ফেসবুক ব্যবহার একদমই উচিত না।
২. ফেসবুক আসক্তি কমানোর উপায় কি?
উত্তরঃ আজকে, এক্ষুনি নিজের ফেসবুক প্রোফাইলটা ডিলিট করে দাও। নাও অর নেভার। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া সহজ, চার ওয়াক্ত নামাজ পড়া কঠিন। সবসময় সত্য বলা সহজ কিন্তু ৯৯.৯% সময় সত্য কথা বলা কঠিন। কারণ মানুষ অভ্যাসের দাস। কাজেই ফেসবুক আসক্তি ধীরে ধীরে কমানোর কোন সুযোগ নাই। এটা একেবারেই বন্ধ করতে হবে। একেবারে বলতে একেবারেই।
৩. কিন্তু ফেসবুকের মাধ্যমে তো আমি পড়াশোনাসহ অনেক কাজে যুক্ত
উত্তরঃ আসক্তি নির্ভরতা তৈরীর মাধ্যমেই কাজ করে। এইসব মোহ তোমাকে কাটাতে হবে। তোমাকে বিকল্প ব্যবস্থা বের করতে হবে। যদি করতে না পার, তাহলে ঐ সমস্ত কাজকে খোদা হাফেজ জানাতে হবে।
একান্তই যদি বর্তমানে অনলাইনে পড়াশোনার জন্য (লাইভ ক্লাস) ফেসবুক ব্যবহার করতে হয় তাহলে একটা আইডি খুলতে পার যেখানে একজনও ফ্রেন্ড থাকবে না, কোন পেইজে লাইক দেওয়া থাকবে না। কোন পোস্ট লাইক-কমেন্ট-শেয়ার করা যাবে না। কোন গ্রুপে যুক্ত হওয়া যাবে না। কোন ভিডিও দেখা যাবে না। কোন স্ট্যাটাস দেওয়া যাবে না। শুধু লাইভ ক্লাস এটেন্ড করবা।
একটা লাইক দিলেই, একটা ভিডিও দেখলেই ফেসবুক এলগরিদম তোমাকে পেঁচিয়ে ধরবে।
৪. কিন্তু ফেসবুকই তো আমাদের মিডিয়া। আমাদের দাওয়াতের মাধ্যম।
উত্তরঃ সিনিয়র দাঈরা আছেন। ওনারা এইসব কাজ করছেন। তারা মানুষকে দাওয়াত দিবেন। আলেমদের সাথে তালুক স্থাপন করে দিবেন।
তুমি আগে অন্তত আন্ডারগ্র্যাজুয়েট কমপ্লিট করো, এরপর দাওয়াতের চিন্তা করো। আপাতত নিজেকে গড়ো। অন্ধের হাতে মশাল কখনো আলো জ্বালায় না। বরং অন্ধের হাতে মশাল আসলে গ্রাম জ্বলেপুড়ে ছাড়খাড় হয়ে যায়।
ফেসবুক না থাকলে অনেক ফেতনার মোকাবেলাই আমাদের করা লাগত না। ফেসবুক আসছে জন্যই নিত্য নতুন ফেতনা প্রবেশ করছে আর নতুন নতুন দাওয়াতের ক্ষেত্র তৈরী হচ্ছে। আজকে সবাই যদি ফেসবুক থেকে দূরে সরে যায়, অনেক ফেতনার মোকাবেলায় দাওয়াতের জরুরতও আফসাফ দূর হয়ে যাবে।
আল্লাহ আমাদের হারামের ধারেকাছেও যেতে নিষেধ করেছেন। আল্লাহ আমাদের আরও বলেছেন আমরা যেন নিজেদের পরীক্ষায় না ফেলি। একদম প্রথম সারির সাহাবাও অনেক কাজ করতেন না পথ হারানোর ভয়ে। আমরা কি তাদের চেয়ে বড় মুমিন হয়ে গেছি যে ফেসবুকের ফেতনাকে নিজেদের কোমল বয়সে জয় করব?