মহান আল্লাহর নির্দেশনা, নিজেদের স্বাভাবিক আত্মমর্যাদা এবং লজ্জাশীলতা ভুলে যে সাময়িক যৌনতৃপ্তির পেছনে এই সভ্যতা আমাদের ছুটে যেতে শেখাচ্ছে, সেই যৌনতার বাস্তবতাটা আসলে কেমন?
অনেকেই মনে করে প্রেমিকের সাথে শুয়ে পড়া মানে হলো ভালোবাসার প্রমাণ দেওয়া। একটা প্রেমের সম্পর্ক পরিপূর্ণ হয় সেক্স করার মাধ্যমে। এর মাধ্যমে এমন এক বন্ধন তৈরি হয় যার ফলে তারা চিরদিনের জন্য একে অপরের হয়ে যায়। বিচ্ছেদ হবার সম্ভাবনা থাকে না। কিন্তু বাস্তবতা আসলে উল্টো।
নাইজেরিয়ার কয়েকজন পিএইচডি গবেষক বলছেন,
‘বিয়ের আগে সেক্স করা কাপলরা একে অপরের কাছে বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়ে ফেলে। বাতাসে কুটিল সন্দেহ ভেসে বেড়ায়। সন্দেহ, অবিশ্বাস, হিংসা, নজরদারি বিয়ের পরে সম্পর্কটাকে বিষিয়ে তোলে–সে তো নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, বিয়ের আগেই তো সে আমার সাথে শুয়ে পড়েছিল, এখন অন্য ছেলে বা অন্য মেয়ের সাথেও তো শুয়ে পড়তে পারে...এমন চিন্তাভাবনা চলতে থাকে দুজনেরই মাথায়। এভাবে একটা সুস্থ সম্পর্ক চলতে পারে না।‘ *
যেদিন থেকে প্রেমিক-প্রেমিকা শরীরের স্বাদ পেয়ে যায় সেদিন থেকেই কমতে থাকে তাদের মধ্যকার আকর্ষণ। কমতে থাকে একে অপরের প্রতি সম্মান ও বিশ্বাসও। প্রেমের ক্ষেত্রে, সেক্সের আগে একে অপরের শরীরের প্রতি একটা কৌতূহল থাকে, রহস্য থাকে। সেক্স হয়ে গেলে সব রহস্য, সব কৌতূহল মিটে যায়।*
নিজেরা একসাথে থাকার রসদ হারিয়ে ফেলে। বিয়ের আগের সেক্সে নিছক শরীরের সুখ আর সাময়িক মোহ ছাড়া আর কিছু থাকে না। এটা স্রেফ কামনা, একে অপরকে ভোগ করা। বিশ্বাস, নির্ভরতা, মমতা, সম্মান, দায়িত্ব, পরিবারের বন্ধন–কিছুই এতে থাকে না।*
তাই যিনা করা ছেলেরাও বিয়ের জন্য সতী নারী খোঁজে। ভারতের মতো অশ্লীল সভ্যতার ধারক দেশেরও শতকরা ৬৩ ভাগ তরুণ বলছে–যদিও তারা যিনা করাটাকে স্বাভাবিক মনে করে কিন্তু বিয়ের জন্য ভার্জিন পাত্রী পছন্দ করে। অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশের প্রতি ৩ জন পুরুষের ১ জন বিয়ের জন্য ভার্জিন মেয়েকে বেশি পছন্দ করে।*
নিকোলাস উলফিঙ্গার হলেন ইউনিভার্সিটি অফ উটাহ’র একজন সমাজবিদ। তিনি গবেষণা করে দেখেন–যেসব অ্যামেরিকান শুধু তাদের স্বামী বা স্ত্রীর সাথে অন্তরঙ্গ হয়, তারা বিবাহিত জীবনে বেশি সুখী হয়।*
এখন তুমিই চিন্তা করে দেখো, তুমি কী চাও। ৫ মিনিটের সস্তা সুখ নাকি হাতে হাত রেখে বাকি জীবনটা একসাথে কাটিয়ে দেবার রসদ?
*প্রবন্ধ: আলেয়া
বই: আকাশের ওপারে আকাশ