কারও অনুমতি ও সম্মতি ছাড়া তার মেসেজের স্ক্রিনশট দেয়া, কল রেকর্ড করা ও প্রচার করা খিয়ানত!
সুস্পষ্ট খিয়ানত! চাই সে যেই হোক।
নবীজি ﷺ বলেছেন,
الْمَجالسُ بالأمانةِ
"প্রতিটা আলাপন হল আমানত"। [ সহিহুল জামি': ৬৬৭৮]
মেসেঞ্জারে, ফোন কলে, কিংবা কয়েকজন বসে যে আড্ডা বা মিটিং করি, সেখানের আলোচনাগুলোও আলাপন। প্রতিটা আলাপনই সংশ্লিষ্টদের নিকট আমানত। হাদীসে আছে, "যার মাঝে আমানতদারিতা নেই, তার মাঝে প্রকৃত ঈমানই নেই।" [ মাজমাউয যাওয়ায়েদঃ ১/১০১]
মাওলানা মামুনুল হকের কল রেকর্ড ফাঁস করা যেমন খিয়ানত, তদ্রূপ বেফাক কর্তৃপক্ষ ও ভিকারুননিসা নূনের ম্যাডামের কল রেকর্ড ফাঁসও খিয়ানত! ইসলাম সবার জন্য সমান।
নবীজি ﷺ বলেছেন,
إذا حدث الرجل الحديث ثم التفت فهي أمانة.
''যখন কেউ কথা বলার সময় আশেপাশে কেউ আছে কি না দেখে নেয়, তখন সেই কথাটা গোপন রাখা ঐ ব্যক্তির নিকট আমানত হয়ে যায়"। (যদিও গোপন রাখার কথা সে মুখে না বলে) [ তিরমিযিঃ ১৯৫৯]
অর্থাৎ আপনাকে কাছের মানুষ ভেবে শেয়ার করেছে, অথবা ঐ কথা কারও নিকট ফাঁস হয়ে যাওয়াটা যদি বক্তার অপছন্দনীয় হয়, তাহলেই সেটা আমানত। এটা তৃতীয় কারও কাছে বলা খিয়ানত। আর যদি সেই কথা বা মেসেজটি ব্যক্তির চরিত্রহীনতা ও দোষ প্রকাশক হয়, তাহলে তো সেটা গীবতও বটে। একে তো খিয়ানত। তার উপর গীবত। আর যদি হয় সেটা প্রকাশ করা অন্যের সাথে মনমালিন্য সৃষ্টি, তাহলে তো সেটা চোগলখোরিও। কখনো এসব কলরেকর্ড বা মেসেজ হয়ে যায় ভয়াবহ ফিতনারও কারণ। বৃহৎ দুটি দলের ফাটল সৃষ্টির মূল উপাদান। অথচ কুরআন বলে- "ফিতনা খুনখারাপির চেয়েও ভয়ানক!"
তবে হ্যা, তিন ক্ষেত্রে তা খিয়ানত বলে গণ্য হবে না।
১। কাউকে হত্যার সিদ্ধান্ত থাকলে।
২। কারও ইজ্জত হরণের পরিকল্পনা থাকলে।
৩। কারও সম্পদ দখলের পরিকল্পনা হলে।
[ আবু দাউদঃ ৪৮৬৯]
আজ আপনি অন্যের দোষ প্রকাশে অতি আনন্দিত?
শুনুন- নবীজি ﷺ আপনাকে কী বলেছেন,
"একবার নবীজি ﷺ মিম্বারে উঠে উচ্চ আওয়াজে বললেন, হে ঐ জামা’আত, যারা মুখে ইসলাম ক্ববূল করেছ কিন্তু অন্তরে এখনো ঈমান মাজবুত হযনি! তোমরা মুসলমানদের কষ্ট দিবে না, মানুষের সামনে তাদের অপমান করবে না। তাদের গোপন দোষ অনুসন্ধানে প্রবৃত্ত হবে না। কেননা, যে লোক তার মুসলিম ভাইয়ের গোপন দোষ অনুসন্ধানে নিয়োজিত হবে আল্লাহ্ তা‘আলা তার গোপন দোষ প্রকাশ করে দিবেন। আর যে ব্যক্তির দোষ আল্লাহ্ তা‘আলা প্রকাশ করে দিবেন তাকে অপমান করে ছাড়বেন, যদিও সে তার ঘরে অবস্থান করে।"
[তিরমিযি:২০৩২]